পৃথিবীতে মানুষ এখন বেঁচে আছে স্রেফ বাঁচার দরকার তাই বেঁচে আছে । যে মানুষের প্রতিদিন শুরু হয় কর্মসাধনের মধ্য দিয়ে সেটা শুধুমাত্র আত্মহত্যা মহাপাপ বলে, মনকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে টিকে থাকা । অনেকটা রোবটের মতোন । কট্টর পরিবারের প্রধান কর্তার হুকুম-বিধি-নিষেধ মান্য করার মতোন । যেনো কারো কোন কথা নেই, কথা বলার থাকনো । সেটারো একটা কারণ অবশ্য আছে তাহলো পরিবারের আয় রুটি রোজগার তো সেই-ই করে ফলতো তার কথা শুনতে হয় মানতে হয় । কিন্তু যেখানে সামষ্টিক ব্যাপার জড়িত সেখানে দায়বদ্ধতা কার কাছে, কে কি করবে সেটা ঠিক করে দেবার কে ? এরা কারা..!!
হরহামেশায় দেখা যায় বিল্ডবোর্ড,টেলিভিশন-পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমগুলোতে লোভনীয় বিজ্ঞাপন ।যেখানে মানুষের আবেগ-অনুভূতি-দেশীয় ইতহিাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে পুঁজি করে নিত্য নতুন লোভনীয় বিজ্ঞাপন নির্মাণ হচ্ছে । যেখানে মানুষের রুচি ঠিক করে দেয় । বিভিন্ন খাবার-দাবার-পোষাক-অঙ্গসজ্জা, কথা বলার কৌশলসহ ইত্যাদি মোদ্দাকথা মানুষের সব কিছু নির্ধারণ করে দেয় । অথচ একটি দেশের প্রবাহমান সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের স্বকীয়ধারার ধার ধারেনা ।
আপনি কি খাবেন কি পরবেন কি ভাববেন কি ভাবাবেন কাকে কি বলবেন সবকিছুই এখন ঠিক করে দেয়া । পাবলিক কি খায় কি চায় সেটার উপর ভিত্তি করে তাদের নতুন নতুন ফমূলার প্রসব ঘটে । রাজনীতি-খেলাধুলা-অর্থনীতি-চলচ্চিত্র-নাটক-উপন্যাস-কবিতায়-চিত্রসহ শিল্পের প্রতিটি মাধ্যমে নতুন নতুন ফর্মূলা ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে । কেউ হয়তো টের পাচ্ছে কেউ হয়তো টের পাচ্ছে না কিংবা চুপ করে রয়েছে ।
সমগ্র বাঙালি জাতির সবচে বড় একত্রিত উৎসব হলো পহেলা বৈশাখ । আর সেই পহেলা বৈশাখকে মাপা হয় ধর্মের মাপকাঠিতে । নিত্য-নতুন ফতোয়া দিচ্ছে । লাগামহীন ঘোলাটে ধার করা বিনদেশী কুসংস্কৃতির ফর্মূলা ঢুকিয়ে দিয়ে মানুষের মানসিক জগৎ ধূসর এবং সে সাথে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে । আর তারা ব্যবহার করছে পৃথিবীর রাষ্ট্রযন্ত্রগুলো । প্রতিটি রাষ্ট্রেরই সাংস্কৃতিক বলয় ভেঙ্গে বুর্জোয়ারা তাদের ফর্মূলাসংস্কৃতি ব্যবহার করছে ।বুর্জোয়াদের কারসাজিতে( এছাড়াও আরও অনেক কিছু জড়িত) ধর্মের তোলায়ার হাতে তোলে নিয়ে মানুষগুলো পৃথিবীর সমস্ত প্রাচীন নিদর্শন, হাজার বছরের সাক্ষী, চিহ্নগুলো মুচে দেওয়ার চেষ্টা করছে ।
এভাবে আপাত দৃষ্টিতে আপনি স্বাধীন হলেও আপনি কি স্বাধীন ! যদি এমোন হতো যে প্রতিটি দেশের ভালো দিকগুলো যা মানুষের জন্য সুস্থ, সুন্দর সৃজনশীল মানসিক জগৎ তৈরীতে সক্ষম । প্রতিটি মানুষ বেঁচে থাকবে সমান সুযোগ সুবিধা নিয়ে তাহলে কারও কিছু বলার থাকেনা,থাকবেনা । বুর্জোয়াদের বানানো ফর্মূলা. শিখানো ফর্মূালাতে যদি মানুষ নিয়ন্ত্রিত হয়, সমাজ সভ্যতা দিন দিন অসহিষ্ণু হয়ে পরবে তা স্বাভাবিক ।
ক্রমান্বয়ে শ্রেণি বৈষম্য চরমে ওঠছে । বিচিত্র রকমের কর্ম-কুকর্ম মা্ধ্যমগুলো বাঁচার তাগিদে কামড়ে ধরে কোনরকম ভাবে বেঁচে আছে বিশ্বের (বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্ব) সিংহভাগ মানুষ । মানুষের জীবনযাত্রার খোলস পাল্টাবে দিন দিন ঠিকই কিন্তু সেই সাথে একইভাবে বৈষম্যটা থেকে যাবে যা এখনো বলবৎ ।
বুর্জোয়াদের সবচে বড় টার্গেট তরুণ প্রজন্ম । অসুস্থ নোংরা অপসংস্কৃতি অপকৌশল-মুনাফালোভী ফর্মূলা তরুণ প্রজন্মরে মন ও মগজে ঢুকেয়ে দেওয়া হচ্ছে ।নারী স্বাধীনতার কথা বলার আড়ালে-আবডালে হিংস্র জানোয়ার ধর্ষকদের মূলত লেলিয়ে দিচ্ছে । ধর্মের বড়ি গিলে খাওয়াইয়ে দিচ্ছে ।
তাহলে আমরা কি আমাদের অধিকার আমাদের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য-ইতিহাস-রাজনীতি-অর্থনীতি নিয়ে সচেতন !!
পৃথিবীর মানুষগুলোর যদি ঘুম না ভাঙ্গে তাহলে কোনদিন কোন প্রজন্ম একটি সুস্থ-সুন্দর- উদার-বৈষম্যহীন-সৃজনশীল পৃথিবীর দেখা পাবেনা । আমুল পাল্টে দিতে হবে,ভেঙ্গে দিতে হবে,বদলাতে হেব পৃথিবীর পুরনো সব রীতি নীতি, বুজোয়াদের যতসব অপসংস্কৃতি, অপকৌশল, মানুষবিরোধী ফর্মূলা, মুনাফালোভী ফর্মূলা, শোষণমূলক ফর্মূলা । নারী নয় পুরুষ নয় নপুংসক নয় শুধই মানুষ ভাবতে হবে এমন প্রজন্ম তৈরী করতে হবে । যেখানে ধর্মের কোন তোলায়ার থাকবেনা । শান্তি হবে প্রকৃত ধর্ম ।
বিষাদ আব্দুল্লাহ
২০.০৪.২০১৫, ঢাকা ।
বাহ্
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ, ভালোবাসা রইলো বন্ধু কবি কায়েস সৈয়দ...
মুছুন