Ads

সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

আদর্শ একটি বিক্রয়যোগ্য পণ্য

 

বিষাদ আব্দুল্লাহ

কেউ নাই, বিক্রি হতে বাকি নাই কেউ
দুনিয়া বিক্রির ঘরে, হৃদয় কি আর বাহিরে থাকে!
সত্তারে রুধিবে কে আর ! বিক্রি তো হতেই হবে!
আদর্শ একটি বিক্রিযোগ্য পণ্য
প্রেম একটি বিক্রয়যোগ্য পণ্য
আমরা সবাই মিডিয়াদাসী
এই যে আমার অনাগত সন্তান,
যার চোখ আমি এখনও দেখি নি
মিডিয়া দেখেছে,
তার চোখ কেমন!
মন কি দিয়ে বানাইছে!
দু'হাত কোন দিকে!
দু'পা কোন দিকে যাবে!
ইশ্বরও কি বিক্রি হয়!
আমি বিক্রি হয়'নি বলে ভান ধ'রেছি
বিশ্বমিডিয়াশালায়
বিষাদ আব্দুল্লাহ একটি মালবাহী গাধা !

১৯.৯.২২
চাঁদপুর

রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২

কুত্তার বাইচ্চা!



উইঠা দাড়াঁইতে পারি না,

হুদাই পিছলা খাইয়া পইড়া যাই

আমি ব্যথা নিতে পারি নাই


ব্যথা নাকি ফুড়ুৎ করে উড়তে পারে না

ব্যথা নাকি ল্যাঙড়া, খোড়া, মাজা ভাঙা

ব্যথা নাকি বুকের অন্দরে অন্দরে ঢুইকা ভিক্ষা করে

ওইখানে রান্দেবায় ওইখানে খায়


ছোটবেলায়, কুত্তা অনেকগুলা বাচ্চা বিয়াইলে

আমরা কিছু বাচ্চারে ঘাড় ধইরা দূরে গিয়া ফালাইয়া দিতাম

তবুও পিছু পিছু বাইচ্চাগুলা চইলা আইতো


ব্যথা কি তাইলে কুত্তার বাইচ্চা !

এই ব্যথারে কি কয়! ডাক্তার সাব ? হাইপারটেনশন!

এই ব্যথারে কি কয় বুক ধড়ফড়ানি! মাথা ঘুরানি! 


এই ব্যথারে নিনাদে'র মুখের পিটারের মত

থামাইয়া রাখতে চাই! সওদাগরের সিন্ধুকের

তালার চাবি হারাইয়া ফেলার মত রাখতে চাই


এই ব্যথারে বোধহয় আত্মার হিংসুটে জা বলা যায়!


২৭.৭.২২

বি.আ

বুধবার, ১০ নভেম্বর, ২০২১

বেঁচে থাকা নামক মার্বেল

বিষাদ আব্দুল্লাহ

চোখ না দেখলেই বোধহয় ভালো হত, বেঁচে যেতাম। অনুভূতিশূন্য হলে বোধহয় প্রশান্তি নেমে আসত শরীরে। কেন বেঁচে আছি কিংবা কেনইবা বেঁচে থাকব। বেঁচে থাকা কেন জরুরি! চারদিকে মানুষ আছে, গাড়ির শব্দে মুখর মফস্বলের শহর, পরিচিতজন, আওয়াজটুকু কান অব্দি শুধু পৌঁছাচ্ছে না।

বারবার মনেহয়, মরে যাই, মরে যাই। ভীরু যারা পৃথিবীতে সব, তাদের কি শুধু মরতে ইচ্ছে করে!
তাদের কি আমার মত একলা লাগে! প্রখর নিঃসঙ্গ মনেহয়! এত মানুষ কেবল কথা শুনার, এবং সে কথাগুলো বিশ্বাস করার কেউ নেই ! পুরোনো দিনের কথা মনেপড়ে, ঢাকার জীবন। কথা শুনার লোক ছিল সেখানে, একদল মানুষপ্রিয় দল ছিল। যাদের কারো কারো পকেটশুন্য তবু কেবলি মুখে হাসি। প্রচুর হাসতাম, অনেক বেশি, হাসতে হাসতে বুকের ভিতর শীতেলা রাতের শেষ সময়ে নেমে আসা শীতের অনুভূতি আমাদের বুকজুড়ে নেমে আসত। রাত তছনছ করে ধরা দিত কবিতা।
তখন আমার কেবলি লিখতে ইচ্ছে করে। কেবল বাঁচতে ইচ্ছে করে। প্রেম ছিল না, বোউ ছিল না, সন্তান ছিল না। ছিল সব বন্ধু যাদের অনেকেরই পকেটশুন্য টাকা অথচ মনভর্তি কবিতারা ফুলে থাকত। সাহিত্য মহারথীদের নিয়ে চলত চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবুও না, এই ইমোশনাল মাইন্ডটা আমারে একা করে দিত। সবার মাঝে থেকেও একা এবং যার ফলশ্রুতিতে নিজের ভিতর চলত নিজেরই সাথে ভাঙচুর। কেউ বুঝে ফেলত, কেউ বুঝেও ঠাট্টা করত। কেউবা সান্ত্বনা।
এখন চাকরি করি, মার্কেটিংয়ে। প্রতিদিন মাথাভর্তি দুঃশ্চিন্তা নিয়ে ঘরে ফিরে আমার ভীষণ বলতে ইচ্ছে করে অনেক কিছু, হাসতে ইচ্ছে করে। বেতন পাই, অভাব ছাড়ে না। বেতন পাই, শুন্য পকেট। বেতন পাই মা-বাবার দুঃখ গোছায় না। বেতন পাই ঘুরতে যেতে পারি না। এখন আমি ভালো, কমপ্লিট মানুষ। বিয়ে করেছি বোউ আছে, আছে বাচ্চা, সব আছে। শুধু মুখের জবান হারিয়ে গেছে।
মৃত্যুতে মুক্তি, এমন ভাবনার জাল ঘিরে ধরে থাকে, আমার শুধু ভালো লাগে যে, বেঁচে থাকা নামক মার্বেল শুধু কোথায় যেন গড়িয়ে যায়!

মঙ্গলবার, ৯.১১.২১
আমেরিকান স্পেশালাইড হাসপাতাল
মাইজদি, নোয়াখালী

সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১

শহর অস্ত্রোপচার রুম

Collected from Google
Collected From Google 

এশহর যেখানে সবচে বেশি মানুষের ঘাম ঝরে

আর তার প্রতিটি দিন-রাত-প্রভাত

হাসপাতালের অস্রোপচার রুমে 

নির্বাক রোগীর অন্তশূন্য দৃষ্টির এপিঠ-ওপিঠে

থাপ্পি খেলে


ধুঁকতে ধুঁকতে এক শ্রমিক বলে গেল-

'হায় মালিক,

সবাইরে দিলা ময়না-টিয়া

আমারে দিলা শালিক'


বেকার কোন কোন যুবক রোজ-

ফার্মেসীর সামনে থেকে বারবার ফিরে আসে

ফুটপাতে কত শত হাত ফিরিয়ে দেয় মানুষজন


মাঝে মাঝে দেখি,

অনেকে দুই-পাঁচ টাকা দিলেও নেয় না

কারণ বলেছিল তারা ভাত খাবে-

অথচ উন্নয়ন বন্যার স্রোত বয়...


রচনাকাল-

৮ নভেম্বর (২০১৫-২০১৯)

মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১

ছন্দ ছাড়া আসলে কি হয়!

সম্ভবত ২০১৮ সাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চিহ্নমেলায় গিয়েছিলাম বন্ধু কবি ও অনুবাদক কায়েস সৈয়দের সাথে। তো আমাদের জন্য যে রুম বরাদ্ধ হয়েছিল। সে রুমে কবিদের ধূমপান আর আড্ডায় রীতিমত গরম হয়ে উঠেছিল আশপাশ। কবি সালেহীন বিপ্লব, কায়েস, কবি নিখিল নওশাদসহ আরও অনেকে ছিল। নাম মনে নেই এই এমুহূর্ত। কায়েস সৈয়দের মনে থাকতে পারে।

যাহোক, সমসাময়িক ভাবনা থেকে শুরু রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দসহ হালের যত লেখক-কবি আছে প্রায় সবাইর সাহিত্যকর্মসহ বিবিধ বিষয় নিয়ে জম্পেশ রমরমা উঠে উঠল আড্ডা।
এসব প্রসঙ্গের মধ্যে হুট করে একজন কবি নাম মনে পড়ছে না এ মুহূর্তে, তিনি ছন্দের আলোচনা তুললেন। ছন্দ নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলল। আমি বললাম, ছন্দ জানা জরুরি মানা জরুরি না। আমি মনেকরি কবিতায় মাতাব্বরির প্রয়োজন নাই।
এ ছন্দ জিনিসটা না আমার মাথায় কোনদিনই ঢুকে নি, মানে কোনদিনই ঢুকাতে পারিনি। চেষ্টা করেছি মাথায় ঢুকে না। পড়ি, এখনো পড়েই চলেছি কিন্তু এই পেয়াজের মাথাওয়ালা মগজে ঢুকে না। পড়ি তবে ছন্দ নিয়া সময় নষ্ট করি না। সেদিন সিগারেট টানতে টানতে একটা কথায় বলেছিলাম, কবিতার লেখার সময় শুধু আমি হৃদয়ের ডাক শুনি, হৃদয়কে প্রাধান্য দিই, যুক্তি ও না, শুধু হৃদয়ের কথা শুনি। আমি মনে করি, মনই একটা ছন্দ। আর কবিতা লেখার সময় মন আমাকে দিয়ে নাম না জানা ছন্দ লিখে নেয়, কোন না কোন প্রচলিত ছন্দে পড়ে যায়। এসব কথায় ঐ
কবি বেরাজ এবং হতাশ হয়েছিলেন। আমার এ কথার সাথে রুমে আড্ডার কবিদের অনেকেরই বোধহয় সম্মতি ছিল। বিশেষ করে, নিখিল নওশাদের।

ছন্দ ছাড়া কবিতা হয় না, ছন্দ ছাড়া আসলে দুনিয়ায় কিছুই হয় না। আপনি খাবেন-দাবেন, সেক্স করবেন। চুরি-ডাকাতি করবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। সব কিছুতেই কিন্তু ছন্দ আছে। আর সেই ছন্দ মনই ঠিক করে নেয়। তার মানে হল, যখন আপনি কবিতা লিখছেন তা কোন না কোন ছন্দের মধ্যে পড়বেই।

ছন্দ বিশ্বাসী কবি ভাইটা দেখি একদিন আমাকে আনফ্রেণ্ড করে দিলেন। বোধহয় তার মনে হয়েছিল, এদের মধ্যে কেউ কেউ মেধাহীন, অকবি। তাঁর নিজেকে তখন বোধহয় মনে হয়েছিল তিনি কবি। আজ কেন যেন ওই আড্ডাটার কথা মনে পড়ল। কেন মনে পড়ল জানি না!
                                 ৭.১০.২০২১, বৃহ:
                             প্রাইম হাসপাতাল, মাইজদি।

সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

অদরকারি কবিতা-২

ছবি: সংগৃহীত

 ১.

ক্লোনাজিপাম
*
ক্লোনাজিপাম পানে
এ চোখ থেকে ও চোখে
সন্তরিত হতে থাকে কথা'র তোরণ
ক্রমশ ঘুম বড়ির নিকট বিক্রি হতে চলেছে
কাউকে দায়ী করি না, না নিয়তি নয়! পরিণাম
২.
পাগল
*
কবিতা হলো ধুতুরাফুল
পাগলের মত সুন্দর!
৩.
চলচ্চিত্র নির্মাতা
*
তন্ন তন্ন করে হলেও তাকে খোঁজে আনি
জীবিত করে তুলি, স্বপ্নে তৈরি করে ফেলি!
জীবিত হয়ে নিনাদের দাঁত না ওঠা মাড়ির
মত
হাসতে থাকে
আর-আমি খড়কুটো ধরে টিকে থাকি তার জন্যে!

৫.৭.২১, সোমবার, মাইজদি।

সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১

অদরকারি কবিতা

ছবি: সংগৃহীত

১.

মৃত্যু হ’লে বুঝি!
পিঁপড়া খবর পেয়ে যায়!

২৮.০৫.২০২১, মাইজদি

২.

কান্নায় বারণ নেই, শুধু কান্নাটাই আসে না
কথাদের কোনদিন জবান আসে যদি
বলে দিও
জায়নামাজে
যেন
অপদার্থ
সন্তানের
মৃত্যু
কামনা
করে!

শরীরের গন্ধ নিল যে
বলে দিও,
অপদার্থের জবান থাকে না!
সামর্থ্যও না!

২১.০৫.২০২১, মাইজদি

 ৩.

জীবনের বাঁকে বাঁকে অচেনা খাদ! যেদিন পড়ে যাবো, সে-দিন আর উঠবো না! গা বাঁচিয়ে চলতে চলতে বোবা। বোবা কি রোগ! নাকি পুঞ্জিভূত কথা জমাট ছারপোকা। কথাদের রক্তও খুব প্রিয়ো। কুড়েকুড়ে খায়, বুক খায়, পিঠ খায়, হাঁটু ভেঙে দিতে জানে। কথা-ছারপোকা বোবা করে দেয় নাকি!
মানুষের দখলে আকাশ। কোথাও চিৎকারের জায়গা নেই। নির্জন জায়গায় সেখানেও চিৎকার অসম্ভব! কেন! কেন কাঁদতে জানি না, কাঁদতে গেলে গলা ধরে! কেন ধরবে! কান্না পারি না কেন! কাঁদবো না কেন! কান্নাটা ত দরকার! কান্না ছাড়া মানুষ বাঁচে নাকি! কিভাবে আশা? আশায় কি বাঁচিয়ে রাখে! না কান্নাও বাঁচাতে সাহায্য করে! অথচ কান্না করা সম্ভব না!

কথা’রা ফুটবে ক’বে !

২১.০৫.২০২১,
১৮.০৬.২০২১(এডিট), মাইজদি

৪.
অন্ধকার ধাওয়া করে!
স্বপ্ন-পিদিম নিভু নিভু
ধাওয়া করে, নেয় পিছু পিছু
খামচে ধরো শার্টের কলারে
টেনে হিঁছড়ে মাথা নত করে
চুপ মেরে বসে থাকতে বলো
ধাওয়া করে অন্ধকার!
স্বপ্ন-পিদিম নিভু নিভু
এখনি ফতোয়া দাও, যে-
ভাববে না, ভাবা নিষেধ-হারাম
আয়রন করা শার্ট-প্যান্ট পড়ো
সু-মালিশ করো বেরিয়ে পড়ো অফিসার
দেখতে এক্কেবারে বিন্দাস-আহ্ কি যে আরাম
চারদিক থেকে ধাওয়া করে নিকষ আধার
স্বপ্ন-পিদিম ধুপ করে নিভে গেলে
আর বুকের নিকটে ফেরা গেল না বলে
আফসোস ঢুকিয়ে দাও
নচেৎ মেরেই ফেলো মাথা ভরতি কবিতার পোক!
মরে যাক! শালা মরে যাক!

২১.০৪.২০২১, মাইজদি

শুক্রবার, ১১ জুন, ২০২১

আমি চাই আমার কবিতা জনপ্রিয় না হোক

আমি চাই আমার কবিতা জনপ্রিয় না হোক, কিংবা জীবদ্দশায় পাঠকপ্রিয়তা পাক। আমি চাই পাঠক পড়ুক, কিন্তু জনপ্রিয় না করে তুলুক। হালের জবানায়জনপ্রিয়শব্দটির নতুন একটি ইংরেজি শব্দ এসেছে নামভাইরাল ভাইরাল হওয়া চাই না। চাই পাঠক পড়ুক, ভাবুক। আর কিছু না। চাই জীবদ্দশায় কেউ পুরস্কৃত না করুক। এসব কি খুব দরকার! আসলে আমার কি লেখক হবার কথা ছিল? আমার তা মনে হয় না। কেনই বা আমি লেখক হতে চাইবো! কি দরকার ছিল! এক বাবা ছাড়া আর চৌদ্দরগোষ্ঠীর কাউকেই তো দেখিনি কবিতা ভালোবাসে, উপন্যাস পড়ে, নাচে গায়। তাহলে শুরুটা বোধহয় আমার অতি ইমোশনাল মাইণ্ড আর বাবার সাহিত্য-সঙ্গীতপ্রীতির মোহ থেকে।

 এসব থেকে নাকি! হতেও পারে!

নারীর প্রতি ভালোবাসায় কি লেখক হওয়ার দিকে টেনে নিলো! আমার বিশ্বাস, যে আমি এখনো লেখক হয়ে উঠতে পারিনি। লেখক হয়ে উঠার কোন সিঁড়ি আজও জানা নেই। ভবিষ্যতেও সিঁড়ি  খোঁজে পাব না ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত। একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করলাম, আমার কোনকালেই মনে হয়নি যে আমি লেখক। সম্ভবত এজন্য লিখতে পারছি। যেদিন মনে হবে সেদিন থেকে হয়তো আর লিখতেও পারব না। মৃত হয়ে থাকবো।

চারপাশের বন্ধু-আত্মীয় পরিজন এদের সিংহভাগই প্রবাস জীবনে গিয়ে প্রচুর ভুঁইফোড় পয়সার মালিক। কেউ দেশে থেকেও সফল। অথচ আমার তীব্র মোহ জন্মাল না কেন! নাকি লেখার প্রতি দ্বায়বদ্ধতা থেকে! নাকি মানুষের প্রতি দ্বায়বদ্ধতা থেকে! নাকি সমাজের-রাষ্ট্র-পৃথিবীর প্রতি দ্বায়বদ্ধতা থেকে! আমি জানি আমার যে কর্মক্ষমতা। তাতে প্রচুর পয়সা কামানো সম্ভব। তবুও কেন যাই না! কেনইবা যেতে মন চায় না! মন চায় না তা কিন্তু একেবারে সত্যও নয়। চায় মন চায় মাঝে মাঝে। ভয় জাগে যদি লেখা থেকে দূরে সরে যাই। আমার তো কথা বলার একটাই জায়গা। একমাত্র লিখলেই তো নিজেকে হালকা লাগে, বেঁচে যাই। লিখে প্রাণ শক্তি ফিরে পাই। টাকা যা একেবারে অসম্ভব। দমবন্ধ হওয়া থেকে বাঁচি।

লেখাটা মূলত আমার কাছে জার্নির মত। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনে যাওয়ার মত। ঘুরতে গেলে যেমন সতেজ লাগে। লিখলেই একমাত্র সতেজতা ফিরে পাই। কিন্তু পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে দায়িত্ব তো এসে যায়। দায় এড়াই কি করে। টাকাও তো দরকার। ভয় লাগে যদি অধিক টাকার মোহে অন্ধ হয়ে যাই। যদি মানুষকে ভুলে যাই। যায় তো অন্তত আমার চারপাশের পরিবেশ তাই বলে। এমন অনেককেই দেখেছি, অনেকবড় নীতিবাক্য আউড়ায়ে এখন টাকার আরামে ঘুমান। সবসময় এটা ভাবি, প্রভুদের মত নয় মানুষ হিসেবে সময়ের সাথে তালমিলিয়ে চলার মত টাকা আমার দরকার। তাতেই খুশি। অর্থবিত্ত, ভুঁইফোঁড় দরকার নাই। আমি মানুষের কাতারে থাকতে চাই। নিজের কথা বলতে চাই। মানুষের কথা বলতে চাই। আমি মানুষ হয়ে উঠতে চাই। 

তাহলে আমার লেখা জনপ্রিয় হোক চাই না কেন

চাই না এজন্য, জনপ্রিয়তা কিংবা প্রশংসাবাক্য, পাঠকপ্রিয়তা কোনটাই লেখার জন্য জরুরি না, মুর্খ্য না। আমার এসবের দরকার হবে কেন! স্বীকৃতির জন্য কি লিখতে এসেছি নাকি! লিখি তো নিজেকে প্রচণ্ড দমবন্ধ, মরে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাবার জন্য। লিখলেই তবে আমি বেঁচে যাই। স্বীকৃতি দিয়ে কি হবে! মরণের পর কেউ যদি মনে নাও রাখে তাতেও কোন বিন্দুমাত্র আফসোস থাকবে না। প্রচুর হাসতে চাই, প্রচুর বাঁচতে চাই। বাঁচার সাথে সাতে জনপ্রিয়তা হলে ক্ষতি কি

ক্ষতি কি নেই ! আছে। জনপ্রিয়তা একটা ভয়। একটা আতঙ্ক। আতঙ্ক একবার পেয়ে গেলে আর লিখা সম্ভব হবে কিনা জানি না! না লিখলে আমার বাঁচার সম্ভাবনা কম। প্রকৃত কথা হলো, না লিখলে আমি মরে যাব, আর যদি জনপ্রিয়তা বা পাঠকপ্রিয়তার কারণে লেখা বন্ধ হয়ে যায়! তাহলে বিষাদ আব্দুল্লাহ মৃত। বেঁচে থাকাটাই আমার ধর্ম। আয়ুষ্কাল অবধি, মৃত্যু আসার আগে কেন মরবো আমি!

 

বিষাদ আব্দুল্লাহ   

১১.০৬.২০২১, মাইজদি