Ads

সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার-বিষাদ আব্দুল্লাহ (এগারোটি সিরিজ কবিতা)

ক্লিক: শহিদুল লিটন; এডিট: বিষাদ আব্দুল্লাহ
কৃতজ্ঞতা: পিক্সআর্ট এপ্স 

(কবিতার বীজগুলো যে বপন করে দিয়েছে চিত্ত মরুজমিতে, নিম্নোক্ত কবিতাগুলো তার জন্য রচিত । কবিতাসত্ত্বও তাকে দিলাম।অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮ তে যাকে সরাসরি দেখার পর থেকে নিদ্রাজনিত রোগে ভুগছি, যা এখনো ভোগায়।অথচ, নিদ্রাজনিত রোগে ভোগার কারণগুলো এখনো তাকে বলতে পারি নি।)


ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০১

ঘুম ধরে না ডিয়ার
কি খেয়েছি!
হুইস্কি না বিয়ার?
০৪.০৩.২০১৮, ঢাকা

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার 

ঘুমে চোখ ভেঙে যায়
মন ঘুমায় না কেনো !
অস্থিরতা অমোঘ শেকড়ে
হাসির উপদ্রুব, কা ?
কা যেনো..!
১৪.০৩.২০১৮, ঢাকা

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৩

আচড়ে পড়ে আলো, ঝুল বারান্দায়
শব্দ নেই সায় নেই, ভিতরে কে আছেন ভাই?
এক পরিশুদ্ধ রমণী ঘুম নিয়ে এলো
কেউ নেই বুঝি, কিন্তু এতো-এতো আলো
কা' বুক থেকে উৎসারিত হলো!
রক্তস্রোতের রঙের মতন!
তাহলে, কি বলেন! বিদায় দিয়ে দিই?
কোন একটি নতুন প্রভাতের বাটি ভর্তি
তরতাজা, একদম টকটকে সমস্ত আলো
নিয়ে এসে যাবে সে...!
১৬.০৩.২০১৮, ঢাকা।

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৪

শূণ্যতার মানচিত্র জানা আছে ঠিকঠাক
শহরের রোডম্যাপ, জানলার বাহিরের
সমস্ত দৃশ্যত অংশ, দুবাহুর মাঝখানের দূরত্ব
তোমার এক চোখ থেকে আরেক চোখের পার্থক্য
যুগল ঠোঁটের সম্ভাব্য আকাঙখা জেনে যাই
মন থেকে আরেক মনের 
প্রবেশপথেই দেখছি বিপত্তি!

নিশ্চিত আমি সমস্ত প্রেমিকের মত নই
তোমার প্রেমিক-বন্ধ্যা প্রেমিক! পিঠে
স্কুলবেলার দগদগে ক্ষত, ভয়ে-ভয়ে
শার্টের হাতার মত গুটিয়ে নিয়েছে
ভয়ে-ভয়ে ঘুমচোখে কিশোর বালকের মত
স্বপ্নে ভিজে, ভেজায় তোমাকে...
তোমাকে ক্লু দিতেই হবে! প্রবেশপথে
দাঁড়িয়ে আছি, গোলাপ নয় কবিতা নিয়ে...

১৮.০৩.২০১৮, ঢাকা।

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৫

স্বপ্নের ভিতরে ডুবে থাকা এক ধরনের ফ্যান্টাসি ফলে স্বপ্নের ভিতরে তাকে কোনমতেই ধরা যায় না রাগ ওঠে, ফেসবুকের সার্চ বক্সে যাবতীয় গুচ্ছ গুচ্ছ পায়চারাগুলি আস্কারা পেতে থাকে, দিনের সাথে রাতের সাথে পাল্লা দেয় দীর্ঘ নিঃশ্বাসগুলো বিষাদ বক্সে হুড়মুড়িয়ে ঢুকতে চায়, যেনো এক-একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস প্রতিযোগি অথচ, নিজেই তো প্রতিযোগিতার মাঠে হাঁপিয়ে ওঠি রোজ তাহলে আমারই ছোট নিঃশ্বাসগুলো বড় হওয়ার জন্য এবং তাকে ছোঁয়ার জন্য এতটাই ব্যাকুল কেন? নিজের সাথে নিঃশ্বাসের বড্ড বাড়াবাড়ি! কেননা, নিঃশ্বাস তো রক্ত নিঃসৃত হাওয়া, হাওয়ার আগুন, নিকোটিন ধোঁয়ার ভিতরে ঘোরপাক কিংবা ডিগবাজি খায়, কবিতার ভিতরে উলটপালট হয়ে যাই যেমন সেই বোধের ভিতর ঢুকে দেখো উধাও আত্মার সাথে কফিনের গভীর প্রণয় এবং শেষে দেখা গেলো প্রণয় প্রকৃতিজাত, আমার সাথে তোমার সখ্যতা যেভাবে পরিণতির দিকে ধাবমান...

১৯.০৩.২০১৮, ঢাকা


ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৬

চোখের সামনে,
অথচ আজই বুঝলাম
সুন্দর এতটাই গভীরে তাকে খোঁজে পাওয়া দুষ্কর
২০.০৩.২০১৮, ঢাকা


ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৭

রুপসী টাইফয়েড এই রাত্তিরে কোথায় পালাই! 'টা দিন ভাবছি না, শুকনো পাতার চে নিশ্চুপ! যাতে তোর পায়ের ছাপ না পরে বিগত ভাবনার ভিতরে কিলবিল করা প্রেমপ্রিয় পোকাগুলো ঘাঁটতে গিয়ে দেখি অফুরন্ত বেদনার রস খুব আরাম করে গিলেই যাচ্ছিস যা সম্ভবত দুই হাজার পাঁচ সালে মজিয়ে রাখা, বেজন্মা সুন্দরী টাইফয়েড, খাও রক্তের ভিতরে সুস্বাদু খাবারের আয়োজন মারফত বেকার প্রেমিকের কি হতে পারে! বড় জোর কোন এক জায়গায় জ্বলে যাওয়া সলতের বাতি
গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে ফিরতে কোল ভরে গেছে ইঞ্জেকশানে। লোকাল বাস থেকে দেখছি কাঁটাতারের ওপারে ইন্ডিয়ার আকাশ-পাহাড়ের অপূর্ব বিলীন। অথচ দেখছি না কিছুই। ফ্ল্যাশব্যাকে খোঁজে পাই, এইতো কিছু দিন আগে, প্রেম নিবেদনের মানসিক সরঞ্জামাদি দিয়ে, বুকে তল্লাশি চালাতে গিয়ে দেখি কান্নার সশস্ত্র এলোপাথাড়ি হামলায় পিঠে ব্যথা, পোষা কুকুরের মত পোষা জ্বর, তোকে ফাক! কারণ তুই ফের আসলি! ভৃত্যের মত বেজন্মা প্রেমিকা তুই, আসবি- তো বুকের নীচে তোর তো খাদ্য, তাজা-প্রেমিকের স্বস্বাদু রক্ত, খা--! চিয়ার্স!
তো অপেক্ষাবৃক্ষের কচিপাতার উপর সেসব কবিতা জমেছে, উড়ে যাওয়ার আগে সে নিবে কি! চুরি হওয়া ঘুমগুলো ফেরত পাবো তো? বেজন্মা রুপসী টাইফয়েড!

২৪.০৩.২০১৮,বাড়িতে, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।


ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৮

রাত যখন গায়ক হয়ে ওঠে
তখন জোনাকপোকারা
এক-একজন সঙ্গীত পরিচালক
এমন যুবতী বাতাসে
চটি জুতা পায়ে খালি-- হাঁটতে থাকবো
যেখানে হৃদয় কুড়ে পাওয়া যায়, সেখানে
নিহত কেন হয়ে যাই রোজ
কেনইবা দাফন হয় না এই লাশের
ঘটনা খুলে বলার ভান ধরবো
সত্যিটা কোনদিন বলা হবে না...
২৮.০৩.২০১৮, বাড়িতে, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ০৯

আকাশে চাঁদ আর রাত কোলাহলপূর্ণ খালি কলসিতে যে বাধ্যের আওয়াজ ওঠে তা মূলত জলের শব্দ, কলসির নিচে মায়াময় কোলাহল নিশি শুন্য কলসি রাত গভীরের দিকে দৌড়াতে গেলেও ব্যর্থ কারণ শাদা আলোর বৃত্তে কোন পথ নেই লোহার গারদে বসে কবি শাদা আলোর দৈর্ঘ্য মাপছে দেখে সে বোকা হাসির চিত্র নিয়ে সামনে দাঁড়ালো কি সহজ অথচ দুর্মর তখন চাঁদ গারদের উপর জানি রাত্রির জন্য বরাদ্দ সময়ে আমার ঘুম নেই, চিত্রটিকে জীবিত করে ফের দেখা ছাড়া...

যখন নিজেরই স্থিরচিত্রে লাইক দেয় কিংবা গদ্য কবিতায় তখন কি বোকা হাসি জীবিত হয়ে ওঠে? দেখি না তো! কিছু অনুভব করছি টর্চার করছে সে পিঠের ওপর। আঘাত সমস্ত শরীরে ভাইরাল। সে সারাদিন-রাত কি অন্য কাউকে বোকা হাসির চিত্র ছুঁড়ে দেয়! দিয়েছিল কাউকে? যদি দেয় তবে ছুঁড়ে দেওয়া চিত্রের উদ্ধারকর্মী, নির্ঘাত বিরহী কবি বনে গেছে। চাঁদের মত ঘাতকিনীই তো কবিতার কারিগর! ঘুম উপড়ে তুলে নেওয়ার মায়াবী জল্লাদ !
এখন লোহার গারদে শাদা আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আলোর বিছানা ফেলেছে। চিত্রের অর্থ উদ্ধার বাতাসের মত লাগে...

০২.০৪.২০১৮, বাড়িতে, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১০

একটা ছবি বুকের উপর রাখলে
আগুন-নিঃশ্বাস দার্জিলিং- যায়
কথাটি বিশ্বাস-অবিশ্বাসে প্রমাণিত
ছবিটা ফুটপাতে-পথে পথে চিকা মারতে পারো
নিঃসন্দেহে ! এখন থেকে দমকল বাহিনী দেশে-দেশে
অর্থহীন ! ঘুমের ওষুধ লেখার চর্চা থেকে
সরে এসো মেডিক্যাল স্টুডেন্টরা
বুকের উপর একটা ছবি রেখে দেখো, কি হয়!

সেবিকা,
রোগীদের অক্সিজেনমাস্কগুলো সব এক্ষুনি খুলো,
একটা ছবি বুকের উপর আঁকতে বলো রাখতে বলো !
যে ছবিটা তাঁর পছন্দ, ভাবতে বলো তৃতীয় বিশ্বের মানুষ আমি নই,
ছবির সাথে বুক লাগালে দুঃখ গেলো কই!
রোগ-শোক এসবের নাম তো কোনদিন- শুনো নি
এমনটা মনে হবে নিশ্চই
০৩.০৪.২০১৮, বাড়িতে, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

ঘুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১১


ব্যথারা ক্ষুধার্ত সাপের মত পিঠের
দখলে থাকা মাংসে চিয়ার্সে মত্ত
যেনো বিত্তশালীদের পানশালার ঘর
তোমাকে বুঝতে হবে সেচ্ছায়
সাপের বিষ কতটুকু গিলেছে হিয়া
হজম 'তে আর কতক্ষণ বাকি!
মাঝির সন্ধানী চোখ দিয়ে খুঁজতে হবে 
এসব ব্যথার উৎসমূল
শুধু কোনদিন- বুঝার দরকার নেই
খোঁজার তো প্রশ- আসে না,
এতটা কাল প্রেম হয়'নি কেনো?
কেনইবা
ঠোঁট দু'টি কালো ?
এতটা স্পর্ধা দেখাতে গেলে
তুমি নির্ঘাত উন্মাদিনী...


১৭.০৪.২০১৮, ফয়সল হাসপাতাল, কুমিল্লা টাউন

প্রকাশকাল: ২৩.০৪.২০১৮ ইং

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন